মাছের রাজা ইলিশের অপূর্ব স্বাদের রহস্য।






ইলিশ মাছ মূলত একটি সামুদ্রিক মাছ। এরা ডিম পাড়ার উদ্দেশ্য দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সমুদ্র থেকে ঝাক বেধে নদীর মোহনা হয়ে অগভীর নদীতে চলে আসে। কারন গভীর সমুদ্র ইলিশের ডিম ছাড়া তথা ছোট ছোট ইলিশের পোনার সর্বাধিক মাত্রায় বেঁচে থাকার পক্ষে অনুকূল নয়। ইলিশ মাছ যখন নদী অভিমূখে যাত্রা শুরু করে তখন এদের শরীর প্রচুর পরিমানে ফ্যাট বা চর্বিতে পরিপূর্ণ থাকে। এই দীর্ঘ যাত্রা পথে তারা খাদ্য খায়না বললেই চলে। ফলে এই চর্বি ভেঙ্গেই যে শক্তি উৎপন্ন হয় তাকে কাজে লাগিয়ে ইলিশ মাছ এই সময়ে বেচে থাকে।

ভোজন রসিক বাঙ্গালীর রসনার এক অবিচ্ছেদ্য উপকরন এই সুস্বাদু ইলিশ মাছ। এবার ইলিশের স্বাদের কারন উদ্ঘাটনে নেমে পড়া যাক। মানুষের জ্বিহবা সাধারনত মূল চার রকমের স্বাধ (মিষ্টি, টক, লবনাক্ত ও তেঁতো) প্রায় নির্ভূলভাবে সনাক্ত করতে পারে। এর পাশাপাশি আমাদের নাক বিভিন্ন প্রকারের ঘ্রান নিয়ে তা স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে পাঠিয়ে দেয়, আর মস্তিষ্ক এগুলি বিশ্লষণ করে আমদের ঐ ঘ্রান সম্পর্কে এক ধরনের বিশেষ অনুভূতি সৃষ্টি করে। এছাড়াও খাদ্যের তাপমাত্রাও স্বাদের তারতম্য ঘটায়। ইলিশ মাছের শরীরে প্রচুর পরিমানে পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড  (যেমনঃ ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬) থাকে যা উপরিউক্ত চারটি মূল স্বাদের বাইরেও একটি অনন্য কমপ্লেক্স স্বাদ উৎপন্ন করে। বিভিন্ন প্রকার অ্যামাইনো এসিড, নিউক্লিওটাইডস, অজৈব আয়ন, জৈব এসিড, জৈব ক্ষার এবং সুগার, স্বাদের সাথে সাথে এই মাছে ব্যতিক্রমী এক গন্ধও এনে দিয়েছে। মূলত এ সকল কারনেই ইলিশ মাছের নাম শুনলেই আমাদের জ্বিভে জল চলে আসে। ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ার ঠিক আগ মুহুর্তেই খেতে সবচেয়ে সুস্বাদু লাগে।
Next
This is the current newest page
Previous
Next Post »