মনোসেক্স তেলাপিয়ার সঠিক আহরন পদ্ধতি ও লাভজনক বাজারজাতকরন ।



বানিজ্যিক চাষে মাছ আহরনের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারন মাছ আহরন বা ধরার সময় ও পদ্ধতি যদি ত্রুটিপূর্ন হয় তাহলে খামারিরা বিক্রয় উপযোগী মাছের সঠিক মূল্য পাবে না ফলে তাদের ব্যবসায় লোকসান হবে। ব্যবসায় লোকসান হলে অধিকাংশ প্রান্তিক মাছ চাষীই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এই কারনে মাছ আহরন বা ধরার ক্ষেত্রে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে চলা উচিৎ।    


সতর্কতাসমূহঃ
ü  বাজারের মাছের চাহিদা ও সরবরাহ খুব ভাল করে পর্যবেক্ষন করে তবেই আহরন করা উচিৎ।
ü  সঠিক মাপের ও ফাঁসের লম্বা জাল ব্যবহার করা উচিৎ।
ü  রাতের বেলায় অক্সিজেনের অভাবজনিত সমস্যার কারনে মাছ ধরা উচিৎ নয়।
ü  সাধারনত ভোর বেলা থেকে বেলা ১১ টা পর্যন্ত মাছ ধরার উপযুক্ত সময়।
ü  মাছ ধরার অন্তত ১২ ঘন্টা আগে থেকেই মাছকে খাদ্য দেয়া বন্ধ করতে হবে।
ü  মাছ ধরার আগের রাতেই অথবা ১-২ ঘন্টা আগে অক্সিজেন পাউডার/ট্যাবলেট দিতে হবে।  
ü  মাছ ধরে সাথে সাথেই বিক্রির জন্য পরিবহন করা যাবে না।
ü  মাছ ধরার পর এগুলোকে হাপার মধ্যে রেখে পরদিন খুব ভোরে বাজারে নিয়ে যেতে হবে।
ü  হাপাতে মাছ রাখার সময় অবশ্যই অক্সিজেন পাউডার/ট্যাবলেট দিতে হবে। 
ü  মাছ ধরার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন এগুলো কোনভাবেই আহত না হয়।
ü  পানি ভর্তি প্লাস্টিকের ড্রামে অক্সিজেন যোগে মাছ পরিবহন করা হয়।
     

সাধারনত প্রতিটি তেলাপিয়া মাছের গড় ওজন ২৫০-৩০০ গ্রাম হলে এগুলো বিক্রয়ের উপযুক্ত হয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের কিছু কিছু অঞ্চলে তেলাপিয়া বেশ বড় করেও(৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি)বিক্রয় করা হয়। সারা বছরই এ মাছের দাম কম বেশি প্রায় একই রকম থাকে। পাইকারি বাজার বা আড়তে মাছের দাম; এর ওজন, বাহ্যিক সৌন্দর্য, যোগান ও চাহিদার উপর নির্ভর করে কেজি প্রতি ১০০-১৫০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে ১ কেজির কাছাকাছি বা সমওজনের মাছের দাম কিছুটা বেশি পাওয়া  যায়। তেলাপিয়া মাছ ২৫০-৩০০ গ্রাম পর্যন্ত হতে ১২০ দিন বা ৪ মাস লাগলেও ১ কেজি হতে প্রায় ৮-৯ মাস লেগে যায়। তেলাপিয়ার গড় ওজন ২৫০-৩০০ গ্রামের যত উপরে উঠতে থাকে, খাদ্যের এফ.সি.আর ও উৎপাদন খরচ তত বাড়তে থাকে। তাই তেলাপিয়া সাধারনত ২৫০-৩০০ গ্রাম ওজন হলেই বিক্রি করা উচিৎ। বানিজ্যিক চাষের ক্ষেত্রে যেহেতু চাষের পুকুর সাধারনত লিজ বা হারি নেয়া হয় সেহেতু এই পুকুর গুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব হবে না। তাই তেলাপিয়ার বানিজ্যিক চাষের ক্ষেত্রে বছরে অন্তত দু’বার চাষ করলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়।
Previous
Next Post »